কাজল শাহনেওয়াজের সঙ্গে আড্ডা: শব্দ। সঙ্গ। এবং ড্রাগস।/ পর্ব ৩
এই ধারাবাহিক জুম আড্ডার শেষ এবং তৃতীয় পর্ব শুরুই হৈসে ওই জায়গা থেকে, যেই জায়গায় তিনি নিজেই ভলান্টিয়ারলি বলসিলেন আগের পর্ব, মানে দ্বিতীয় পর্বের আড্ডায় একদম শেষে, যেইকারণে আমরা অঢেল হা হা হা করি। তিনি বলসিলেন: ‘আমি যেটা মনে করছি যে কনটেম্পরারি, কারেন্ট লেখকদের নিয়ে কথা বলাটা, এটা রয়ে গেল। কেননা, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে আমি আমার সমসাময়িক লেখকদের নিয়ে কথা বলি না . . . হা হা হা. . .’
এই পর্বটা মূলত: তিনি যাদের লেখা পড়ে আনন্দ পান, যাদের পড়ে বড় হৈসেন, যাদের লেখা লেখালেখির বাইরেরও কিছু দেয়, রিডিংয়ের মজা, সেইসব লেখকদের কৌমে ঘুরাঘুরি। এবং সম্ভবত: এই প্রথমবারের মতো কোন আড্ডায় তিনি তার সমকালীন লেখকদের নাম ধরে বলসেন যাদের গল্প পাঠ তাকে আনন্দ দেয়। কবিতাকে মিউট করে শুধু গদ্য নিয়ে মানে কাজল শাহনেওয়াজের গল্প-উপন্যাসের মধ্যেই প্রথম থেকে আড্ডা ঘোরাঘুরি করায় তিনি যখন তার পছন্দের লেখকদের কথা বলতেসিলেন, গদ্য লেখকরাই আসছেন তাই।
লেখার প্রস্তুতি এবং লেখাকালীন প্রক্রিয়ায় যেসব টেকনোলজি ব্যবহার করছেন যেমন স্পিচ টু টেক্সট, ফোন রেকর্ডিং, ফটোগ্রাফ ইত্যাদি নিয়ে বল্লেন। মেমোয়ার্স লেখার প্রক্রিয়া বল্লেন, যেভাবে স্মৃতিকে ধরে আনেন লেখার আগে, এখন তিনি মেমোয়ার্স দীঘলি লেখার মধ্যে আছেন যেহেতু, তাই প্রক্রিয়ার বর্ণনাটা বেশ টাটকা। এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ক্রিয়েটিভ টেক্সট তৈরি করার ভূগোলে-ভূগোলে ঘুরেফিরা করা সমকালীন প্রসঙ্গও ছিল।
তো, সমকালীন কাদের লেখা কাজল শাহনেওয়াজের পছন্দ? যাদের নাম বলসেন, সেটা শক্তির, মানে শক্তি চট্রোপাধ্যায়ের ‘কৃপনের বাম মুঠি’র মতো নয়তো?
হা হা হা . . . প্রিয় পাঠক, দ্যাখেন তাইলে।
আড্ডার এক টুকরা:
শা.বি.র.: তো, সন্দীপন কি আপনার প্রিয় লেখকদের তালিকায় একজন?
কা.শা.: সন্দীপন ভালো, মানে, এই যে চার/পাঁচ জন আছে, সন্দীপন, কমল কুমার, অমীয়ভূষণ, উদয়ন ঘোষ, সুবিমল মিশ্র, এইগুলি সবগুলি মিলিয়েই একটা ক্রিটিক্যালিটি আছে, আপনার নিজের লেখার জন্য খুব কাজে লাগবে, মানে আপনি যদি জিনিষগুলি নিয়ে ভাবতে যান, সময় নিয়ে ভাবতে চান এবং সেসময়গুলিকে কীভাবে লিখবেন এবং সেইসময়গুলি কী করবেন, সেইগুলি নিয়ে, যেইটা গল্পেরও বাইরে, আরো কিছু, সেগুলি কিন্তু, এদের পড়লে, সেই জিনিসগুলি পাওয়া যায়। হ্যা, যেমন খুব হয়তো তৃপ্তি পাওয়া যাবে না উদয়ন ঘোষ পড়ে বা সুবিমল মিশ্র পড়ে, মাথা ইয়ে হয়ে যাবে কিন্তু এই পড়ার অভিজ্ঞতাটাও একটা বিরাট ব্যাপার। হ্যা, এইটা, মানে অন্যরকম। অন্য একটা জার্নি তৈরি করে। . . .
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
কা.শা.: কিন্তু আরো মানে, আমাদের ভুগোলকে পড়ার জন্য যাদেরকে লাগছে, তাদের মধ্যে সৈয়দ হক অবশ্যই। হ্যা, ইলিয়াস, হাসান আজিজুল হক, মাহমুদুল হক, কায়েস আহমেদ, আব্দুল মান্নান সৈয়দ, হুমায়ুন আহমেদ। তো এর সাথে আরেকজনের কথা বিশেষভাবে বলতে হবে, সেটা হলো আল মাহমুদ।
শা.বি.র.: হু-উ-উম
কা.শা: তার কবিতায়, কবিতা দিয়েই শুরু করসিলাম, কিন্তু আল মাহমুদ যে এতো গভীর, মানে গদ্যের, মানে এতো কাজ করে গেছে যে ভাবলে অস্বাভাবিক, মানে ইয়া লাগে। মনে হয় তার গল্পটাও গদ্যের জায়গায় আরেকজন আল মাহমুদকে পাশাপাশি দাঁড় করানো যায়। আর এর সাথে যোগ করা যায় আমাদের একটু সিনিয়র শহীদুল জহীর। ওকেও পড়া যায় আরকি। এই যাদের নাম বলসি, নামগুলির সাথে সম্পর্কটা হৈলো যে আপনার লেনদেনের সম্পর্ক। মানে আপনি পড়লে কিছু পাবেনও, আবার, ওই রিডিংয়ের পাওয়ার সাথে সাথে আপনার, মানে যদি লেখক হন, তাহলে লেখকের যে প্রাপ্তি সেটাও এই লেখকদের কাছ থেকে হয়। মানে খালি হাতে ফিরে আসতে হবে না আরকি।
শা.বি.র.: হুঁ-উ-উ
কা.শা: তো আর ওয়ার্ল্ড লিটারেচারের, এটাও সেই প্রথম থেকে শুরু হৈসে . . .
শা.বি.র.: কাজলভাই, আমি একটু . . .
কা.শা: হ্যা
শা.বি.র.: কাজলভাই হুমায়ূন আজাদ কি আপনার . . .
কা.শা: না আমরা তো, মানে ইয়ে, হ্যা হুমায়ূন আজাদের অন্য লেখাগুলো ভালো, কিন্তু আমি ঠিক হুমায়ূন আজাদের ফিকশনের ভক্ত না আর কি।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
কা.শা: আবার এদিকে ধরেন কাফকা বা ওই যে মার্কেজ, হ্যা, আবার এদিকে ধরেন মান্টো, রুশদি, অরুন্ধুতি। এইটা আমি বিভিন্ন সময়ের কথা বলতেসি। রিডিংয়ের বিভিন্ন সময়ে এদের ভাল্লাগসে। ভাল্লাগসে মানে প্রয়োজনীয় মনে হৈসে। আরো তো অনেক কিছু, অনেককেই পড়সি। মানে ভাল্লাগসে। এদেরকে বেশি প্রয়োজনীয় মনে হৈসে আমার। এদের নামগুলি বল্লাম এ জন্য, এদের নাম বলাতে এক ধরনের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম।
শা.বি.র.: হা হা হা . . . বিশ্ব সাহিত্যের প্রতি. . . হা হা হা . . .
কা.শা: হা হা হা . . . এদের . . . বিশ্ব সাহিত্য, লোকাল সাহিত্য, সব। আর আমি আরেকটা যেটা নিয়ে ভাবছিলাম যে আমাদের কনটেম্পরারি লেখকদের কথা . . .
শা.বি.র.: হ্যা, এইটাই আমার পরবর্তী প্রশ্ন ছিল। কিন্তু আপনি কি, আহমদ ছফা স্কিপ করে গেলেন না বাদ পড়ে গেল। আহমদ ছফাকে নিয়ে কি একটু কিছু বলবেন?
কা.শা: . . .
আগের প্রকাশিত দুই পর্ব:
পর্ব ২: “একটা অ্যাপ তৈরির পেছনে পরিকল্পনা থাকে যেভাবে, একটা কবিতা, গল্প লেখার ক্ষেত্রে ঠিক সেই ধরনের পরিকল্পনা করি আরকি।
“একটা অ্যাপ তৈরির পেছনে পরিকল্পনা থাকে যেভাবে, একটা কবিতা, গল্প লেখার ক্ষেত্রে ঠিক সেই ধরনের পরিকল্পনা করি আরকি।”
পর্ব ১: “ওই ড্রাগ করতাম সারাক্ষণ। ওই সারারাত একটু খাইতেসি, একটু লিখতেসি . . . হি হি হি . . .