যুক্তরাষ্ট্র, একটু বিস্তৃতভাবে বল্লে ওয়েস্ট বা পশ্চিমা বলে পরিচিত বড়লোক দেশগুলার অস্ত্র, অর্থ এবং মানসিক সমর্থনে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের যে গাজা অঞ্চল গুঁড়া-গুঁড়া করে ফেলছে, সেই গাজার কবি মোসাব আবু তোহা। তার ইংরেজি ভাষায় লেখা কবিতা “হোয়াট ইজ হোম?”/What is Home?। ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদ শামীমা বিনতে রহমান
কাকে বলে বাড়ি?
বাড়ি কি:
এটা হলো স্কুলে যাওয়ার পথে গাছের ছায়া
পুরাপুরি উৎপাটিত হওয়ার আগ পর্যন্ত।
এটা আমার দাদি-দাদার বিবাহের সাদা-কালো ফটো
দেয়াল ভেঙ্গে পড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
এটা আমার চাচার জায়নামায, যেইখানে ডজর-ডজন পিঁপড়া ঘুমাইতো
শীত রাতে, লুট হয়ে জাদুঘরে স্থান নেয়ার আগ পর্যন্ত।
এটা সেই ওভেন, যেটাতে আমার মা রোজ রুটি বেইক আর মুরগি রোস্ট করতো
বোমায় আমাদের বাড়ি ছাই হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
এটা সেই ক্যাফেটা যেইখানে আমি ফুটবল ম্যাচ দেখতাম এবং খেলতাম —
আমার বাচ্চাটা আমাকে থামায় দেয়, বলে: একটা চার অক্ষরের শব্দ ধরে রাখতে পারে
এই সবকিছু?
ফিলিস্তিনের উত্তর গাজায় জন্ম নেয়া ও বড় হওয়া কবি মোসাব আবু তোহা আর্ন্তজাতিক খবরের শিরোনাম হন যখন আইডিএফ বা ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স রাফা সীমান্তের চেকপোস্ট থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায়। ১৯ নভেম্বর ২০২৩, গাজায় মার্কিন তথা গোটা ওয়েস্ট সমর্থিত ইসরায়েলি যুদ্ধের দেড় মাস। ২১ নভেম্বর লিটহাব একটা পোস্ট আপলোড করে “হ্যোয়ার ইজ মোসাব আবু তোহা?”। তার আগে ২৯ অক্টোবর আবু তোহা ইনস্টাগ্রামে একটা ভিডিও পোস্ট করে লেখেন: “ওইখানটায় আমার বাড়ি ছিল। এখন কিছুই নাই, কিছুই নাই সেখানে। না আমার বই, না বংশ পরম্পরায় থাকা কোন সামগ্রি। না রান্না ঘর, কিছুই নাই”। ২১ নভেম্বরই তিনি ছাড়া পান, কিন্তু অনেক পিটুনি-নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছিল।
আবু তোহা ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা করেন। থিংস ইয়্যু মে ফাইন্ড হিডেন ইন মাই ইয়ার: পয়েমস ফ্রম গাজা (Things You May Find Hidden in My Ear) তার প্রথম বই, ২০২২ সালে প্রকাশিত এবং ওই বছরই প্যালেস্টাইন বুক অ্যাওয়ার্ড ২০২২ পায়। এই কবিতাটা সেই বই থেকেই নেয়া। এখন পর্যন্ত এটি ২২টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে। গাজায় তিনি এডওয়ার্ড সাইদ লাইব্রেরি গড়ে তোলেন, যেটা সেখানে প্রথম ইংরেজি ভাষায় সাহিত্যের লাইব্রেরি।
এখন আবু তোহা মিশরে থাকেন আর অপেক্ষা করছেন যুদ্ধ শেষ হবে এবং গাজায় ফিরে এসে আবার বাড়ি গড়বেন।
কবিতার ইংরেজি ভার্সন: